Breaking News

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুনের ঘটনায় নতুন যে তথ্য দিলো পুলিশ

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি বহুতল ভবনের সপ্তম তলায় মা–মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় নতুন তথ্য দিয়েছে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ওই বাসার গৃহকর্মীর দায়িত্বে থাকা অজ্ঞাতপরিচয় নারীই এখন পর্যন্ত একমাত্র সন্দেহভাজন। তবে এখনো তার পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

তদন্ত কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, চার দিন আগে লায়লা আফরোজের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন ওই নারী। প্রতিদিনই তিনি বোরকা পরে বা মুখমণ্ডল ঢেকে আসা–যাওয়া করতেন। ফলে ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরায় তার মুখ ধরা পড়েনি। নিহত লায়লা আফরোজ ও তার কিশোরী মেয়ে নাফিসা ছাড়া আর কেউ তার চেহারা দেখেনি। তাই তার নাম–পরিচয়সহ কোনো ব্যক্তিগত তথ্য উদ্ধার সম্ভব হয়নি।

সোমবার সকাল ৭টায় কর্মস্থল উত্তরায় যান লায়লার স্বামী আজিজুল ইসলাম, যিনি পেশায় শিক্ষক। কর্মস্থলে পৌঁছে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি। পরে সকাল ১১টার দিকে বাসায় ফিরে দেখেন, স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) বাসার ভেতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।

বাসার প্রধান ফটকের কাছে মেয়ে নাফিসা নাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫)–কে গুরুতর জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে আজিজুল ইসলাম দেখতে পান। গৃহকর্মী সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বাসায় প্রবেশ করেন এবং ৯টা ৩৫ মিনিটে তার মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। বের হওয়ার সময় তিনি একটি মুঠোফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যান।

এই ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ওই নারীকে একমাত্র আসামি করে সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন আজিজুল ইসলাম।

পুলিশ জানায়, ঘটনার পর ভবনের এক নিরাপত্তাকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল। তিনি জানান, চার দিন আগে এক নারী কাজের খোঁজে ভবনের সামনে এলে লায়লা আফরোজের পরিবারের অনুরোধে তাকে বাসায় নিয়ে যান। তবে ওই নারীর সঙ্গে তার পূর্ব পরিচয় ছিল না।

নিহতদের স্বজনরাও জানান, গৃহকর্মীর পরিচয় ও ফোন নম্বর জানতে চাইলে তিনি নানা অজুহাত দেখিয়ে কোনো তথ্য দেননি।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান বলেন, গৃহকর্মীর পরিচয় শনাক্তে কাজ চলছে। বলার মতো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এখনো হয়নি। তবে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ডে নিহত মা–মেয়ের মরদেহ মঙ্গলবার নাটোরে দাফন করা হয়। নবাব সিরাজ–উদ–দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে জানাজা শেষে তাদের স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। মরদেহ পৌঁছালে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। জানাজার আগে স্বজনেরা দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

About Admin

Check Also

স্বামীসহ গৃহকর্মী আয়েশা ৩ দিনের রিমান্ডে

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশা আক্তার ও তার স্বামী রাব্বির ৩ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *