ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদিকে গুলির ঘটনা তদন্তে বেরিয়ে এসেছে নতুন তথ্য। হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বর প্লেট উদ্ধার করেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
গত ১২ ডিসেম্বর গণসংযোগের জন্য বিজয়নগর এলাকায় গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে হাদিকে গুলি করা হয়। গুলিটি তার মাথায় লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সোমবার দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়।
হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পরিবারের সম্মতিতে রোববার রাতে পল্টন থানায় একটি মামলা করেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। মামলাটি বর্তমানে ডিবিতে রয়েছে।
এ মামলায় ফয়সালের মা-বাবা, স্ত্রী ও শ্যালকসহ আটজনকে গ্রেফতারের তথ্য দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মঙ্গলবার ফয়সালের সহযোগী কবিরের ৭ দিন, সোমবার ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ শিপু এবং ঘনিষ্ঠ বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
এর আগের দিন রোববার গ্রেফতার হওয়া মোটরসাইকেল মালিক মো. আব্দুল হান্নানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় একযোগে তদন্তে নামে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটনার সময় ব্যবহৃত মোটর সাইকেলের মালিক সন্দেহে শুরুতেই গ্রেফতার করা হয় আব্দুল হান্নানকে। তবে ঘটনার অনেক আগেই মোটরসাইকেল বিক্রির কথা আদালতকে জানান হান্নান। পরে তাকে ৩ দিনের রিমান্ড দেন আদালত।
গ্রেফতার-রিমান্ডে যখন কারাগারে হান্নান তখন তদন্তে নতুন মোড় আনে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট- সিটিটিসি। বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানায়, রাজধানীর বনলতা আবাসিক এলাকা থেকে গত রোববার হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বর প্লেট উদ্ধার করা হয়েছে। মোটরসাইকেলটির মালিকের তালিকায় নেই হান্নানের নাম। দু’টির নম্বর প্লেটও ভিন্ন।
সিটিটিসি জানায়, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেট পরিবর্তনের বিষয়টি উদঘাটন করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শেরে বাংলা নগর থানার পশ্চিম আগারগাঁও বনলতা আবাসিক এলাকার একটি বাড়ির নিচ তলার পার্কিং থেকে মোটরসাইকেল ও হেলমেট উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে ভুয়া নম্বর প্লেট পরিত্যক্ত অবস্থায় ম্যানহোলের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়।
সিটিটিসি আরও জানায়, মোটরসাইকেলের মালিকানা শনাক্তে নিবিড়ভাবে তদন্ত করা হয়। হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের প্রথম মালিক ছিলেন আব্দুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। পরবর্তীতে শহিদুল, রাসেল, মার্কেটপ্লেস, ওবায়দুল ইসলাম, আনারুল এবং আনারুলের কাছ থেকে পুনরায় ওবায়দুল হয়ে শুভ নামের এক ব্যক্তি মোটরসাইকেলটি ক্রয় করেন। সর্বমোট ৮ ব্যক্তির হাতবদল হয়ে হামলার ঘটনায় জড়িত প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সলের সহযোগী মো. কবিরের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে মাইনুদ্দিন ইসলামের নামে মোটরসাইকেলটি কেনা হয়।
উদ্ধারকৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট এবং ভুয়া নম্বর প্লেটটি ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
BN NEWS My WordPress Blog